ইঞ্জেকশনের ভায়ালের মধ্যে ছত্রাক! শিশুকে দিতে গিয়ে চমকে উঠলেন নার্স এনআরএস হাসপাতালে
অসুস্থ হয়ে শিশুটি ভর্তি হয় নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজে (এনআরএস)। তাকে ইঞ্জেকশন দিতে হবে। সেটা কাজ করতে এগিয়ে এলেন নার্স। আর চমকে উঠলেন ইঞ্জেকশন দিতে গিয়ে। কারণ ওই ইঞ্জেকশনের ভায়ালের মধ্যে ওই নার্স দেখতে পেলেন ছত্রাক! শুনতে আশ্চর্য লাগলেও এটাই বাস্তবে ঘটেছে।
ইঞ্জেকশন সরবরাহ সংস্থা এনআরএস হাসপাতালে পা রাখলেই তাদের জবাব চাওয়া হবে। কেন এমন ঘটনা ঘটল? ব্যাখ্যা চাওয়া হবে। এখানে এক শিশু শ্বাসকষ্ট নিয়ে ভর্তি হয়েছিল। জন্মের পর থেকেই ওই শিশুটি শ্বাসকষ্টের সমস্যা নিয়ে ভুগছিল। তাই নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ‘স্পেশ্যাল নিউ বর্ন কেয়ার ইউনিট’ বিভাগে রাখা হয়েছিল। ওই শিশুকে ‘সিলডেনাফিল সাইট্রেট’ ইঞ্জেকশন দেওয়ার জন্য প্রেসক্রিপশনে লেখেন চিকিৎসক। তাই হাসপাতালের ওষুধের স্টোর থেকে ওয়ার্ডে আনা হয় ইঞ্জেকশনের ভায়াল। আর তাতেই ছত্রাকের উপস্থিতি চোখে পড়ে কর্তব্যরত নার্সের বলে সূত্রের খবর।
এই ঘটনার পর তৎক্ষণাৎ নার্স হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে গোটা বিষয়টি জানান। তার পরেই ওই ভায়াল পাল্টানো হয়। চিকিৎসকরা জানান, এই ইঞ্জেকশন দেওয়া হলে বড় বিপদ ঘটে যেত। এই বিষয়ে শিশুরোগ চিকিৎসক অপূর্ব ঘোষ জানান, পালমোনারি হাইপারটেনশন অর্থাৎ ফুসফুসের শিরায় বাতাসের চাপ প্রচণ্ড পরিমাণে বেড়ে গেলে সেটা নিয়ন্ত্রণে রাখতে ‘সিলডেনাফিল সাইট্রেট’ ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়। তিনি বলেন, ‘ছত্রাক–সহ ওই ইঞ্জেকশন শিশুর শরীরে দেওয়া হলে প্রাণহানির ঝুঁকি থাকত। বিপদ ঘটতে পারত।’
এছাড়া ওই ইঞ্জেকশনের ভায়ালের গায়ে যে লেবেল সাঁটা রয়েছে সেখানে লেখা আছে, ভায়ালটি ২০২৩ সালের জুন মাসে তৈরি হয়েছে। আর মেয়াদ উত্তীর্ণ হবে ২০২৫ সালের মে মাসে। তাহলে কেমন করে ওই ভায়ালের মধ্যে ছত্রাক জন্মাল? উঠেছে প্রশ্ন। খাস কলকাতার গুরুত্বপূর্ণ একটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এমন ঘটনা ঘটায় জীবন সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। ওই স্টোরে আসা ওষুধ এবং ইঞ্জেকশন কেন আগেই পরীক্ষা করা হয় না? সে প্রশ্ন তুলছেন অনেকে। এই গোটা বিষয়টি নিয়ে নীলরতন সরকার হাসপাতালের সুপার ইন্দিরা দে বলেন, ‘ কোনও কোনও ওষুধে এমন সমস্যা দেখা দেয়। তবে তা নজরে আসতেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ওই ব্যাচের সমস্ত ইঞ্জেকশন বাতিল করা হয়েছে। সরবরাহকারী সংস্থার কাছে রিপোর্ট তলব করা হয়েছে।’
READ ON APP