ইতিমধ্যে দক্ষিণবঙ্গের প্রায় সব জেলার তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি ছাড়িয়ে গিয়েছে। আর এমন চাঁদিফাটা গরমের কারণে হঠাৎ করেই হিট স্ট্রোক বা সান স্ট্রোকে আক্রান্তের সংখ্যা একধাক্কায় অনেকটাই ঊর্ধ্বমুখী। তাই সুস্থ-সবল জীবন কাটাতে চাইলে এমন তাপদাহের মধ্যে যেন তেন প্রকারেণ হিট স্ট্রোক নিয়ে সাবধান হতে হবে।
তাই আর সময় নষ্ট না করে কলকাতা শহরের বিশিষ্ট মেডিসিন বিশেষজ্ঞ
ডা: আশিস মিত্রের মুখ থেকেই হিট স্ট্রোকের আগাম কিছু লক্ষণ সম্পর্কে বিশদে জেনে নিন। আর এরপর থেকে রাস্তায় বেরিয়ে শরীরে এমন কোনও লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত নিন ব্যবস্থা। নইলে কিন্তু প্রাণ নিয়ে টানাটানি পড়তে সময় লাগবে না।
বিপদের অপর নাম হিট স্ট্রোক
ডা: আশিস মিত্রের কথায়, আমাদের মস্তিষ্কের হাইপোথ্যালামাস নামক অংশটি শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। কিন্তু অত্যধিক গরমের কারণে অনেক সময় এই অংশটি নিজের কাজটি ঠিকমতো করতে পারে না।
ফলে শরীরের তাপমাত্রা খুব বেড়ে যায়। আর এই সমস্যার নামই হল স্ট্রোক। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য,
হিট স্ট্রোক সকলেরই হতে পারে। তবে সাধারণত বয়স্ক এবং বাচ্চাদের মধ্য়েই এই রোগের প্রকোপ বেশি। তাই এই দুই দলকে এই সময় অবশ্যই সাবধানে থাকতে হবে।
ঘরেও হতে পারে বিপদ
আমাদের মধ্যে অনেকেই মনে করেন শুধুমাত্র রোদ মাথায় বাইরে বেরলেই বোধহয় এই রোগের ফাঁদে পড়ার আশঙ্কা বাড়ে। তবে বিষয়টা কিন্তু একবারেই তেমন নয়।
বরং এই গরমে কোনও ভেন্টিলেশনহীন ঘরে থাকলেও
হিট স্ট্রোক হওয়া সম্ভব। তাই দহনদিনে এমন ঘরে থাকতে হবে, যেখানে ঠিকমতো বায়ু চলাচল হয়। নইলে কিন্তু এহেন বড়সড় বিপদের ফাঁদে পড়ে বেজায় কষ্ট পাবেন।
আগাম লক্ষণ দেখলেই সাবধান
ডা: আশিস মিত্রের কথায়, হিট স্ট্রোকের আগে শরীরে কয়েকটি পূর্ব লক্ষণ ফুটে ওঠে। যেমন ধরুন–১. রোদে বেরিয়ে হাঁটার সময় পায়ে টান ধরতে পারে২. হুট করে ব্লাড প্রেশার কমে যেতে পারে৩.
পিছু নিতে পারে অবসন্নতা ৪. হঠাৎ করে ঘুরে যেতে পারে মাথা৫. অত্যধিক ক্লান্তি গ্রাস করতে পারে শরীরকেতাই রোদে বেরিয়ে এইসব লক্ষণ দেখা দিলে একবার চিকিৎসকের কাছে গিয়ে নিজের সমস্যার কথা খুলে বলুন। তারপর তাঁর পরামর্শ মতো চলুন। আশা করছি, এই নিয়মটা মেনে চললেই আপনাকে আর বিপদের ফাঁদে পড়ে কষ্ট পেতে হবে না।
ছুটে যান ইমার্জেন্সি
বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত রোগীর কোনও হুশ থাকে না। তাই আপনার সামনে কোনও মানুষের এমন দশা হলে তাঁকে সবার প্রথমে কোনও শীতল জায়গায় নিয়ে গিয়ে শুইয়ে বা বসিয়ে দিন।
তারপর তাঁর জামা-কাপড় আলগা করে ঠান্ডা জল দিয়ে গা-হাত-পা-মুখ-ঘাড় ধুইয়ে দিন। এভাবে যদি তাঁর সংজ্ঞা ফেরে ভালো, নইলে দ্রুত রোগীকে নিয়ে নিকটবর্তী হাসপাতালে যান। এই কাজটা করলেই কিন্তু আক্রান্তের প্রাণ বেঁচে যাওয়ার সম্ভাবনা বাড়বে।
রোগ প্রতিরোধে জোর দিন
হিট স্ট্রোক প্রতিরোধ করতে চাইলে বেলা ১০টা থেকে বিকেল ৪টে পর্যন্ত বাইরে বেরনো যাবে না। আর একান্তই যদি এই সময় বাইরে বেরতে হয়, তাহলে মাথায় ছাতা দিন বা টুপি পরুন।